চাতুর্মাস ব্রত কি এবং কেন পালন করবো




হরিবোল....
চাতুর্মাস ব্রত সম্বন্ধে....
♥চাতুর্মাস কি এবং-কেন পালণ করবো?♥

[শ্রাবণ-ভাদ্র-আশ্বিন ও কার্তিক]
এ চারমাস শ্রীভগবান বিষ্ণুদেব ক্ষীর সাগরে শ্বেতদ্বীপে অনন্ত শয্যায় নিদ্রিত হোন।
বলা হয় শয়নী একাদশী (জগন্নাথ রথযাত্রার পর কিন্তু কাল একদিনে একাদশী তিথি ও উল্টো রথযাত্রা পরে গেছে শয়ন একাদশী তিথি আষাঢ়ী শুক্লা
তিথিতে ভগবান শয়ন গ্রহণ করেন।

পার্শ্ব একাদশী (ভাদ্র শুক্লা একাদশী)তে পার্শ্ব পরিবর্তন করেন, এবং উত্থান একাদশী (কার্তিক শুক্লা একাদশী)তে উত্থিত হন।

বছরের এই চারি মাস প্রাকৃতিক কারণে মানুষের দেহ ও মনে রজো ও তমোগুণী প্রভাব অধিক দেখা যায়।
অঘটন বেশী ঘটে তাই কায়মনোবাক্যে সংযত থাকা বাঞ্ছনীয়।
কোনও কোনও বিষয়ে কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়।
ভক্তগণ #কৃষ্ণভক্তি বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে চাতুর্মাস্য ব্রত নিয়ম করেন।

চতুর্মাসেষু কর্তব্য কৃষ্ণভক্তি বিবৃদ্ধয়ে ॥
পুরাণে বলা হয়েছে....

যো বিনা নিয়মং মর্ত্যো
ব্রতং বা জপ্যমেব বা।
চাতুর্মাস্য নয়েন্ মূর্খো
জীবন্নপি মৃতো হি সঃ ॥

যে ব্যক্তি নিয়ম, ব্রত বা জপ ব্যতীত চাতুর্মাস্য যাপন করে, সেই ব্যক্তি অজ্ঞ ও জীবন্মৃত।
.
শ্রীব্রহ্মা নারদমুনিকে বলছেন, হে নারদ, চাতুর্মাস্য ব্রত ভক্তি সহকারে পালন করলে মানুষ পরমাগতি লাভ করার সুযোগ পাবে।
.
♦ব্রত নিয়মগুলি হলো ♦
১) বেশী বেশী করে হরিনাম জপ করতে হবে। যারা হরেকৃষ্ণ মহামন্ত্র জপ করেন না, তাঁরা শুরু করে দেবেন। যারা নিয়মিত মন্ত্র জপ করেন, তাঁরা জপসংখ্যা বৃদ্ধি করবেন। কলিবদ্ধ জীবের সদ্গতি লাভের একমাত্র উপায় হরিনাম, আমাদের মনকে সুরক্ষা দানকরে মন্ত্র হরিনাম।
.
২) প্রতিদিন গীতা-ভাগবত শ্রবণ বা পাঠ করতে হবে। ভগবানের কথা, ভক্তের কথা আলোচনাই আমাদের অসার হৃদয়ে আশা ও আনন্দ সঞ্চার করে থাকে। যারা ভগবৎ কথায় সময় দিতে পারে না, তারা আজেবাজে কথায় সময় পেয়ে বসে।
.
৩) তর্ক, গালগল্প এড়িয়ে চলতে হবে। কলিযুগের মানুষ আমরা তর্ক করতে, ঝগড়া বাধাতে, গালগল্পে খুবই উন্মুখ হয়ে থাকি। টিভি দেখা, নভেল পড়াও এর অন্তর্ভুক্ত। এসব অসৎসঙ্গ দোষ ছাড়া অন্য কিছু নয়।
.
৪) সকালে স্নান সারতে হবে।
ভক্তগণ তো ভোর চারটায় স্নান সেরে মঙ্গল আরতিতে যোগ দেন। যত্ন নেন কোনও দিন যেন ফাঁকি না যায়।
মঙ্গলময় #শ্রীহরির কৃপাকটাক্ষ লাভের উপযুক্ত ব্রাহ্মমুহূর্তে শুচিশুদ্ধ হয়ে জেগে থাকা বাঞ্ছনীয়।

♦চাতুর্মাসে যা বর্জনীয় করতে হবে♦
৫) শ্রাবণ মাসে:- শাক, ভাদ্রে দই, আশ্বিনে দুধ এবং কার্তিকে মাষকলাই ডাল খাওয়া চলবে না। এই সময়ে এই দ্রব্যগুলি রোগ সৃষ্টি করে। মন বিক্ষিপ্ত করে।

স্কন্দ পুরাণে বলা হয়েছে-
শ্রাবণে বর্জয়েৎ শাকং
দধি ভাদ্রপদে তথা।
দুগ্ধম্ আশ্বযুজে মাসি
কার্তিকে চামিষং ত্যজেৎ ॥

বিশেষতঃ, কার্তিক মাসে বেগুন, বরবটি, শিম আহার নিষিদ্ধ।

৬) শ্রীহরি অর্চন কিংবা শ্রীহরিভক্তিমূলক অন্য কোনও সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রাখতে হবে। সবসময় জানতে হবে অলস মস্তিষ্ক শয়তানের কারখানা। আচারে হোক, প্রচারে হোক যেকোনও সেবায় সবসময় সংযুক্ত থাকতে হবে, তাহলেই আমরা ভালো থাকবো।
এই চাতুর্মাস্য ব্রতের ব্রতকারীরা কেউ শয়ন একাদশী থেকে উত্থান একাদশী পর্যন্ত, কেউ আষাঢ় মাসের গুরু পূর্ণিমা থেকে কার্তিক মাসের হৈমন্তী রাস পূর্ণিমা পর্যন্ত, আবার কেউ কর্কট সংক্রান্তি থেকে মকর সংক্রান্তি পর্যন্ত- এইভাবে পালন করে থাকেন। মোটামুটি যে দিন শুরু করবেন তার চার মাস পরে সমাপন করবেন।

হরিবল,
কৃপা করে শেয়ায় করে
অন্যদের জানানোর সহযোগিতা করুন হরিবল।

0 Comments