শ্রদ্ধাই হচ্ছে কৃষ্ণভাবনামৃত




"শ্রদ্ধা"

অশ্রদ্ধধানাঃ পুরুষা ধর্মস্যাস্য পরন্তপ।
অপ্রাপ্য মাং নিবর্তন্তে মৃত্যুসংসারবর্ত্মনি।।

অর্থাৎ পরমেশ্বর ভগবান অর্জুনকে বললেন, "হে পরন্তপ! এই ভগবদ্ভক্তিতে যাদের শ্রদ্ধা উদিত হয়নি, তারা আমাকে লাভ করতে পারে না। তাই তারা জন্ম-মৃত্যুর পথে ফিরে আসে।" (শ্রীমদ্ভগবদগীতা ৯/৩)

শ্রদ্ধাহীন মানুষের পক্ষে ভক্তিযোগ সাধন করা সম্পূর্ণ অসম্ভব। সাধুসঙ্গে শ্রদ্ধার উদয় হয়। কিন্তু কিছু মানুষ এতই হতভাগ্য যে, মহাপুরুষদের মুখারবিন্দ বেদের সমস্ত প্রমাণ শ্রবণ করার পরেও তাদের হৃদয়ে ভগবানের প্রতি বিশ্বাসের উদয় হয় না। সন্দেহান্বিত হওয়ার ফলে তারা ভক্তিযোগে স্থির থাকতে পারেনা। তাই, কৃষ্ণভাবনায় উন্নতি সাধন করার জন্য শ্রদ্ধাই হচ্ছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। শ্রীচৈতন্য চরিতামৃতে বলা হয়েছে যে, শ্রদ্ধা হচ্ছে সম্পূর্ণভাবে দৃঢ় বিশ্বাস, শুধুমাত্র শ্রীকৃষ্ণের সেবার দ্বারা মানুষ সব রকমের সার্থকতা অর্জন করতে পারে। একেই বলা হয় প্রকৃত বিশ্বাস। শ্রীমদ্ভাগবতে(৪/৩১/১৪) বলা হয়েছে-
যথা তরোর্মূলনিষেচনেন তৃপ্যন্তি তৎস্কন্ধভুজোপশাখা।
প্রাণোপহারাচ্চ যথেন্দ্রিয়াণাং তথৈব সর্বাহণমচ্যুতেজ্যা।।

"গাছের গোড়ায় জল দিলে যেমন তার শাখা-প্রশাখা ও পল্লবাদি আপনা থেকেই পুষ্ট হয়, উদরকে খাদ্য দিলে যেমন সমস্ত ইন্দ্রিয় প্রসন্ন হয়, তেমনি চিন্ময় ভগবৎ-সেবা করার ফলে সমস্ত দেবতা ও জীব আপনা থেকেই সন্তুষ্ট হয়।"

সুতরাং ভগবদ্গীতা অধ্যয়ন করে আমাদের এই সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া উচিত যে, অন্য সমস্ত কর্তব্য কর্ম ত্যাগ করে শ্রীকৃষ্ণের সেবা করাই হচ্ছে কর্তব্য। জীবনের এই দর্শনের প্রতি যথার্থ বিশ্বাসই হচ্ছে শ্রদ্ধা। আর এই শ্রদ্ধাই হচ্ছে "কৃষ্ণভাবনামৃত"।

0 Comments